• সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১২:২২ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম:

বিমানবন্দরে মশার বিড়ম্বনা!

আপডেটঃ : রবিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১৮

কয়েক দিন আগে আমরা বিমানবন্দরের গোলচক্করে যানজটের যন্ত্রণা নিয়া সম্পাদকীয় লিখিয়াছি। আজ খোদ বিমানবন্দরের ভিতরে মশার বিড়ম্বনা নিয়া সম্পাদকীয় লিখিতে হইবে তাহা আমরা ভাবি নাই। ইহার আগে পাখির আঘাতে ফ্লাইট বিলম্ব নিয়া বিমানবন্দরে যে বিরূপ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়, সেই খবর আমাদের অনেকের অজানা নহে। আর গত বৃহস্পতিবার রাত্রে একদল মশা মালয়েশিয়াগামী একটি উড়োজাহাজে ঢুকিয়া পড়িয়া হাঙ্গামা বাঁধায়। যাত্রীরা উঠিবার পর বিমানটি যখন আকাশে উড়িতে উদ্যত, তখনই একের পর এক অভিযোগ আসিতে থাকে কেবিন ক্রুদের কাছে। যাত্রীরা মশার কামড়ে চিত্কার-চেঁচামেচিও শুরু করেন। শেষপর্যন্ত রানওয়ের পরিবর্তে পুনরায় বে এরিয়ায় বিমানটি ফিরাইয়া আনিতে বাধ্য হন পাইলট। পরে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আসিয়া বিমানের মধ্যে থাকা মশা নিধনে ব্যাপৃত হন। এই অভিযান শেষ হইতেই লাগিয়া যায় প্রায় দুইঘণ্টা। এভিয়েশন বিশেষজ্ঞদের মতে,  মশার কারণে ফ্লাইট বিলম্বের ঘটনা বিশ্বে ইহাই প্রথম। প্রায় দুই বত্সর পর হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হইতে যুক্তরাজ্য আকাশপথে পণ্য পরিবহনে নিষেধাজ্ঞা উঠাইয়া নিয়াছে সম্প্রতি। কিন্তু তাহার আগের রাত্রেই একজন পুলিশ সদস্য পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে উপেক্ষা করিয়া কোনো কাগজপত্র ছাড়াই থাই এয়ারলাইনসের একটি বিমানে উঠিয়া পড়িলে পাইলট বিমানটি চালাইতে অস্বীকৃতি জানান। তাহার পরই ঘটিল এই সংঘবদ্ধ মশার আক্রমণের ঘটনা। যুক্তরাজ্যের নিষেধাজ্ঞা তুলিয়া নেওয়ার খবরটি আশাব্যঞ্জক হইলেও বিমানবন্দরে নূতন করিয়া এইসকল অনভিপ্রেত উপদ্রবে ফ্লাইট বিলম্বের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ না করিয়া পারিতেছি না।
অবশ্য হজরত শাহজালাল বিমানবন্দরে মশার উপদ্রব নূতন নহে। ফ্লাইটে উঠিবার পর দেশি-বিদেশি যাত্রীরা মশার অত্যাচারে বিরক্তি প্রকাশ করেন প্রায়শ। লাগেজ বেল্টে যাত্রীদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়াইয়া থাকিবার পাশাপাশি মশার কামড়ও সহ্য করিতে হয়। বিমানবন্দরের চারিদিকের ঘনবসতি এবং দুই পার্শ্বের জঙ্গল ও জলাশয় হইতেছে মশার নিরাপদ প্রজনন ক্ষেত্র। এই বিশাল ও উন্মুক্ত এলাকায় মশা নিধনের কাজটি কঠিন হইলেও অসম্ভব নহে। শুধু মশা নহে, বিমানবন্দর এলাকায় অন্যান্য পোকামাকড়, ইঁদুর ও তেলাপোকার উত্পাতও আছে কম-বেশি। এইজন্য সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষের জরুরি ভিত্তিতে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন। বিমানবন্দরের পাবলিক স্পেস ও ইজারাকৃত স্থান উভয় ক্ষেত্রে মশা ও অন্যান্য পোকামাকড়ের উত্পাত বন্ধ করিতে হইবে। সংবেদনশীল এলাকা বলিয়া বিশ্বের যেকোনো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সার্বিক নিরাপত্তার ক্ষেত্রে অত্যন্ত সতর্ক দৃষ্টি রাখা হয়। কেননা ইহার সহিত জাতীয় ও আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার সম্পর্ক ও ভাবমূর্তিসহ মান-সম্মান জড়িত। তাহাছাড়া যুক্তরাজ্য আকাশপথে পণ্য পরিবহনে নিষেধাজ্ঞা উঠাইয়া নিলেও নিরাপত্তার কারণে অস্ট্রেলিয়া ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের তরফে নিষেধাজ্ঞা এখনও বহাল রহিয়াছে। এমতাবস্থায় হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মশা নিধনে অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণসহ সার্বিক নিরাপত্তা বিধানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হইবে বলিয়া আমরা প্রত্যাশা করি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ