এদিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন বিভাগের একজন অধ্যাপকও স্বীকার করিয়াছেন যে, এবার ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়িতেছে। আর নূতন করিয়া ডেঙ্গু হেমোরোজিক শুরু হইয়াছে। এই হেমোরোজিক হওয়ার কারণে রোগী মারাও যাইতেছে। সাধারণত বর্ষা মৌসুমে প্রচুর বৃষ্টিপাতের কারণে জমিয়া থাকা স্থির পানিতে ডেঙ্গুজ্বর ও চিকুনগুনিয়ার বাহক এডিস মশার উপদ্রব ও বংশবৃদ্ধি পায়। এই দিক দিয়া অনেক আবাসিক এলাকা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বাণিজ্যিক এলাকা, বিভিন্ন ধরনের সরকারি-বেসরকারি দপ্তরের এলাকাও ঝুঁকিপূর্ণ। এইসব এলাকার নির্মাণাধীন বাড়ির ছাদ, পরিত্যক্ত পরিবহন টায়ার, প্লাস্টিকের ড্রাম, বালতি, ফুলের টব ও ডাবের খোসার স্বচ্ছ পানিতে এবং স্যাঁতসেঁতে মেঝেতে এডিস মশা বংশবিস্তার করে। এইজন্য এই সময় ডেঙ্গু প্রতিরোধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত। এই বংশ বিস্তার প্রতিরোধ করিতে হইলে মশার কার্যকর ঔষধ ছিটানোর কার্যক্রম জোরদার করা প্রয়োজন। এই ব্যাপারে হাসপাতালে হাসপাতালে নূতন করিয়া দিক-নির্দেশনা দেওয়া জরুরি, যাহাতে ডাক্তার-নার্সগণ অ্যালার্ট থাকেন। বিশেষত ডেঙ্গু পরীক্ষা-নিরীক্ষা সুলভ বা বিনামূল্যে করিবার ব্যবস্থা থাকা একান্ত দরকার।
প্রকৃতপক্ষে ডেঙ্গুর প্রকোপ হইতে রক্ষা পাইতে হইলে সরকারের সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণের পাশাপাশি এই ব্যাপারে জনগণকেও পূর্ণ সচেতন ও সতর্ক হইতে হইবে। কেননা অনেক সময় ব্যালকনির ফুলের টবে ও বাড়ির ভিতরে ফ্রিজের নিচে জমিয়া থাকা পানিতেও এডিস মশা জন্ম লাভ করিয়া থাকে। এইজন্য নিজ নিজ বাড়ির ভিতর, আঙ্গিনা ও আশেপাশে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালাইবার কোনো বিকল্প নাই। এই ব্যাপারে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবক ও সামাজিক সংগঠনগুলোকেও দ্রুত আগাইয়া আসিতে হইবে। এইভাবে সকলের প্রচেষ্টা ও উদ্যোগে ডেঙ্গুর বংশ নির্বংশ হইতে পারে। দূর হইতে পারে ডেঙ্গুজ্বরের প্রকোপও।