• মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:০২ অপরাহ্ন
শিরোনাম:

রাজশাহীতে বিএনপির ভরাডুবির নেপথ্যে মিনু

আপডেটঃ : বুধবার, ১ আগস্ট, ২০১৮

তানোর (রাজশাহী) প্রতিনিধি॥
রাজশাহী সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের কাছে বিএনপির স্মরণকালের সর্ববৃহত ভরাডুবি হয়েছে। বিএনপির দূর্গে তাদের এমন ভরাডুবিতে তৃণমূল অভিযোগের তীর ছুড়েছে সাবেক মেয়র ও বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্ঠা মিজানুর রহমান মিনুর দিকে। তাদের অভিযোগ মিনুর প্রাসাদ ষড়যন্ত্রের কারণেই বিএনপির এমন ন্যাক্কারজনক ভরাডুবি হয়েছে। এদিকে বিএনপির দূর্গ বলে পরিচিত রাজশাহীতে আওয়ামী লীগের কাছে প্রায় দ্বিগুন ভোটের ব্যবধানে বিএনপির লজ্জাজনক এই পরাজয়ে দলটির নীতিনির্ধারক ও নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক তোলপাড় দেখা দিয়েছে। বিএনপির দলীয় প্রার্থীদের এই লজ্জাজনক পরাজয়কে বিএনপির জনপ্রিয়তার হ্রাস বলে মনে করা হচ্ছে। তবে বিএনপি এই পরাজয়কে জনপ্রিয়তার মাপকাঠি নয় বলে দাবি করছে। অন্যদিকে বিএনপির এমন ভরাডুবির নেপথ্যে নেতৃত্বর প্রতিযোগীতা, আধিপত্য বিস্তার, অভ্যন্তরীণ কোন্দল, সিনিয়র নেতাদের মধ্যে মতবিরোধ ও বিশ্বাসঘাতকতা করায় এমন ভরাডুবি বলে মোটা দাগে মনে করছে তৃণমলের নেতাকর্মীরা। আর এসব নেতাকর্মীদের অভিযোগের তীর দলের চেয়ারপার্সনের উপদেষ্ঠা ও সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিনুর দিকে। তাদের দাবি বিএনপির দূর্গে বিএনপির এমন ভরাডুবি প্রাষাদ ষড়যন্ত্র ব্যতিত কিছুতেই গতে পারে না। আবার ভোট গ্রহণে নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলে বুলবুল মাঠে নামলেও মিনুকে কাছে পায়নি বলেও তৃণমুলের নেতাকর্মীদের মধ্যে প্রচার রয়েছে। আর বিএনপির এমন ভরাডুবি আগামি জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও রাজশাহী অঞ্চলে বিএনপির রাজনীতিতে ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলেও মনে করছে তৃণমূল।
তৃণমূলের অভিমত, রাজশাহী সিটির বিগত নির্বাচনে মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল মেয়র নির্বাচিত হবার পরে তাকে মহানগর বিএনপির সভাপতি করা হয়, আর পদাবোনিত করে মিজানুর রহমান মিনুকে দলের চেয়ারপার্সনের উপদেষ্ঠা করা হয়। এ ঘটনার পর পরই রাজশাহী মহানগর বিএনপিতে দলীয়কোন্দল প্রকট আকার ধারণ করে। মিনু বিষয়টি সহজে মেনে নিতে পারেননি তায় নেপথ্যে থেকে তিনি বুলবুলকে সরিয়ে মহানগর বিএনপির সভাপতির পদে আসতে প্রাসাদ ষড়যন্ত্রের আশ্রয় নেয়। বুলবুল সভাপতি হবার পর থেকেই মিনু তার অনুগতদের নিয়ে রাজনীতিতে অনেকটা নিস্ক্রিয় হয়ে পড়ে। এমনকি সভাপতি মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল ও সম্পাদক এ্যাডঃ শফিকুল হক মিলনের মধ্যে ঠান্ডা লড়াই জিইয়ে রাখে। যে কারণে বিএনপির এই দু’ নেতা কখানোই ঐক্যবদ্ধ হয়ে মহানগর বিএনপিকে এগিয়ে নিতে পারেনি যার প্রভাব পড়েছে সিটি ভোটে। এছাড়াও বুলবুল বিজয়ী হলে তাকে সভাপতির পদ থেকে সরানো যাবে না তাই মিনু তার অনুগত নেতাকর্মীদের নিয়ে ফটোসেশনে থাকলেও ভিতরে ভিতরে নিরব এমনকি বুলবুলের পরাজয় ঘটাতে কাজ করেছে। আর নির্বাচনের শুরু থেকেই ভোটের মাঠে মিনুর গা ছাড়া ভাব আলোচনায় ছিল। বিএনপির মাঠপর্যায়ে তৃণমুল নেতাকর্মীদের অভিযোগ, রাজশাহীতে বিএনপির ভরাডুবিতে দল ক্ষতিগ্রস্ত হলেও মিনু লাভবান হয়েছে। তার দীর্ঘদিনের মনোবাসনা বুলবুলকে সরিয়ে সভাপতি পদে ফিরে আশার সেই স্বপ্ন হয়তো এবার পূরুণ হবে। আর বিএনপির দূর্গে তাদের এমন ভরাডুবিতে রাজশাহী বিএনপিতে নতুন করে গৃহবিবাদ ও মতবিরোধ সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। তবে আওয়ামী লীগের দাবি জামায়াত-বিএনপির দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র, জ্বালাও-পোড়াও-পেট্রলবোমা হামলা ও নাশকতার কারণে জামায়াত-বিএনপির ওপর থেকে সাধারণ মানুষ মূখ ফিরিয়ে নেয়ায় বিএনপির ভরাডুবি হয়েছে। এব্যাপারে একাধিকবার যোগাযোগের চেস্টা করা হলেও বিএনপির দায়িত্বশীল কারো কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ