• শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৫৯ অপরাহ্ন
শিরোনাম:

পরিবেশ দূষণ রোধ: সময়ের দাবী

আপডেটঃ : রবিবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

সফিউল্লাহ আনসারী
বর্তমান সময়ে পরিবেশ দূষণ একটা গুরুতর সমস্যা, যা ক্রমেই মহাবিপর্যয়ের দিকে ছুটে চলেছে। রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশের শহরগুলো বর্তমানে পরিবেশ দূষণের শিকার। বলা হচ্ছে, অপরিকল্পিত নগরায়নের ফলে রাজধানীসহ দেশের ছোট-বড় শহরগুলো মারাত্বক পরিবেশ দূষণে বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়ছে। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা, আর এই প্রাণের শহর ঢাকায় পরিবেশ দূষণ যেনো সয়ে যাওয়া ব্যাপার!
এই ভয়াবহ পরিবেশ দূষন শুধু শহরেই সীমাবদ্ধ নেই ইদানিংকালে শিল্পায়নেয় ছোঁয়া গ্রামাঞ্চলেও লেগেছে। আর শিল্পায়ন আর নগরায়নের প্রভাবে সারাদেশেই পরিবেশ দূষন মহাবিপর্যয় ডেকে আনছে তাতে কোন সন্দেহ নেই। এ সমস্যা শুধু আমাদের দেশেই নয়, সারা বিশ্বে পরিবেশ দূষন বৈষ্যিক সমস্যা হয়ে দাড়িয়েছে। এখনই সচেতনতার পাশাপাশি দ্রুত পরিবেশ রক্ষায় ব্যাবস্থা না নিলে আমাদের আগামী প্রজন্ম ভয়াবহ স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পরবে।
প্রতিনিয়ত শব্দ দূষন, বায়ু দূষন, পানি দূষনসহ এমন কোন দূষন নেই যাতে রাজধানীবাসী নাগরিক জীবনে বিপর্যস্থ হচ্ছে না। পরিবেশ দূষণ এমন এক মহামারি আকার ধারণ করেছে যে, মনে হচ্ছে এখান থেকে পরিত্রাণের আর কোন পথ নেই। বিশ্বব্যাংক বলছে, শহারাঞ্চলে এ দূষনের কারনে প্রতিবছর আমাদের ক্ষতি হচ্ছে ৫২হাজার কোটি টাকা। কি সর্বনাশের কথা! যে দেশে বেকারত্ব আছে, আছে অসহায় গৃহহীন মানুষ, আছে অর্থাভাবে মানুষের কষ্টের জীবন সেখানে শুধুমাত্র পরিবেশ দূষনের কারনে এতো বড় ক্ষতি! আমরা এখনো জাগছি না কেনো।
শুধু দিবস পালন আর আইন করে পরিবেশ দূষন রোধ অসম্ভব। এ দূষন রোধের জন্য আমাদের প্রচলিত আইনের যথাযথ প্রয়োগ, বেশী বেশী বৃক্ষরোপন, বিশেষ করে শুধু খাতায় নয় বাস্তব সামাজিক বনায়ন, সরকারের সদিচ্ছা নিয়ে সংশ্লীষ্ট কর্তৃপক্ষের বাস্তবায়নযোগ্য পদক্ষেপ গ্রহন। শিল্পায়ন আমাদের অর্থনীতির চাকাকে সচল করেছে, স্বীকার করছি।
এই অর্থনীতির চালিকা শক্তি কলকারখানার বর্জ্র থেকে যে দূষন হচ্ছে তা কঠোর হস্তে নিয়ন্ত্রন করতে হবে। জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে এনজিওগুলোর কার্যকর উদ্যোগ ও বাস্তবায়ন। কমপক্ষে পরিবেশ রক্ষায় রাজনৈতিক মতানৈক্যও দেশবাসী আশা করে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হাতেকলমে পরিবেশ রক্ষার কৌশল ও দূষন রোধের উপায় বিষয়ে শিক্ষাদান। শব্দদূষণ ও বায়ু দূষন কমানোর জন্য গাড়ীর হর্ণ ব্যাবহারে নিয়ন্ত্রন, কলকারখানা ও গাড়ীর কালো ধোঁয়া কমানোর জন্য ব্যবস্থা গ্রহন করা। কৃষি জমিতে জৈব সার ব্যাবহার বাড়ানো, কীটনাশকের ব্যবহার কমানোসহ আমাদের জনসচেতনতা পরিবেশ দূষনরোধে কার্যকর ভুমিকা রাখতে পারে বলে আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস।
পরিবেশ দূষণ রোধের জন্য আইন আছে, অথচ নেই আইনের সঠিক প্রয়োগ। জনসচেতনতা বাড়াতে আইনের প্রয়োগ করে আমাদের সমাজ তথা শহর-নগর ও গ্রামকে বাঁচানো সময়ের দাবী।
আমাদের পরিবেশ মানে, প্রাণীজগত, উদ্ভিদজগতসহ আমাদের চারপাশের সবকিছু নিয়ে গড়ে উঠা এই বসবাসের স্থানকে রক্ষায় সকলের একযোগে এগিয়ে আসতে হবে । আকাশ মাটি, স্থল-জল,বন-বনানী, পাহাড়-নদী কোন একটিকে বাদ দিয়ে আমাদের জীবন চিন্তা করা যায় না। আর আল্লাহ প্রদত্ত প্রকৃতিকে বাদ দিয়ে সুস্থভাবে বাঁচার চেষ্ঠাও বিফল।
কারন মানুষ চিন্তা-চেতনা আর তার বুদ্ধি দিয়ে চারপাশের পরিবেশকে সুন্দর করে সাজালেও এই মানুষের দ্বারাই প্রকৃতি ধ্বংস হচ্ছে, পরিবেশ দিন দিন মহা বিপর্যয়ের দিকে যাচ্ছে । মনুষ্য সুষ্ট দূষনরোধ করতে পারলেই আমরা অনেকটাই বেঁচে যাই। প্রথম এবং শেষ কথা, আমাদের জন্যই পরিবেশকে বাঁচিয়ে, সকল ধরনের দূষনরোধ অতীব জরুরী।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ