প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের পদত্যাগে যা কিছু করতে হয় জনগণ তাই করবে বলে জানিয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই।
বুধবার (২১ জুন) সকাল ১০টায় রাজধানীর বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটের সামনে গণমিছিল শুরুর আগে দেওয়া বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
রেজাউল করিম বলেন, আমাদের মেয়র প্রার্থীকে নিয়ে সিইসি যে মন্তব্য করেছেন তা কেউ বলেনি, কোনো সুস্থ মানুষ এমন মন্তব্য করতে পারে না। ফলে কোনো অসুস্থ মানুষ নির্বাচন কমিশনের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থানে থাকতে পারে না। এরপরও যদি তাকে রাখা হয় তাহলে তার পদত্যাগের জন্য যা কিছু করতে হয় জনগণ তাই করবে।
তিনি বলেন, এ সরকারের অধীনে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না। তাই সরকারকে বলবো পদত্যাগ করে একটি জাতীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে।
গণমিছিল শুরুর আগে দলটির বিভিন্ন স্তরের নেতারা আসন্ন জাতীয় নির্বাচন, প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ সরকারের নানা বিষয় নিয়ে বক্তব্য রাখেন। দলটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য প্রিন্সিপাল মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী তার বক্তব্যে বলেন, ভোটকেন্দ্রের ভেতরে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ভোটারদের ভোট দিয়ে দিচ্ছেন। বরিশালে যে ভোট হয়েছে সেখানে হাতপাখা বেশি ভোট পেয়েছে।
তিনি বলেন, এ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন হবে না। আমরা এ নির্বাচন কমিশনের পদত্যাগ চাই। জাতীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন চাই।
সিইসির পদত্যাগ দাবির বেশ কয়েকটি কারণ তুলে ধরেন দলটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আশরাফ আলী আকন্দ। তিনি বলেন, পাঁচটি কারণে সিইসির পদত্যাগ চাই। তিনি মাথা খারাপ, সংবিধানের নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে পারেননি, সন্ত্রাসীদের উসকানি দিয়েছেন, একজন প্রার্থী মারা গেছেন এবং তিনি মিথ্যা কথা বলেন। তিনি অথর্ব, আমরা তার পদত্যাগ চাই।
সিইসির সমালোচনা করে দলটির মহাসচিব ইউনুস আহমদ বলেন, নির্বাচন হয়নি, ভোট ডাকাতি হয়েছে। তার যোগ্যতা নেই অনেকে বলেছে, আমি বলি তার যোগ্যতা আছে। তবে সেটা সরকারের অনুগত ও তোষামোদী করার জন্য।
দলটির যুগ্ম মহাসচিব আশরাফুল আলম বলেন, বুলেটকে ব্যালটের মাধ্যমে প্রতিহত করার কথা জানি, কিন্তু বর্তমান সিইসি ব্যালটকে বুলেটে পরিণত করতে চান। তার বক্তব্য এমনটাই প্রমাণ করে।
আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে সিটি করপোরেশনে কমিশনের সুষ্ঠু নির্বাচন না করার বিষয়টি তুলে ধরে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট মাহমুদুর রহমান বলেন, সিইসি সিলেটে গিয়ে ভালো ভালো কথা বলেছেন। আমি ভেবেছিলাম হয়তো তিনি ভালো হয়ে গেছেন। কিন্তু কয়লা ধুলে ময়লা যায় না। তিনি বরিশালে এর প্রমাণ দিয়েছেন। শায়েখের রক্তের বদলা এ সরকারকে দিতে হবে।
তিনি বলেন, আজকে সিলেটের মানুষ নির্বাচন বয়কট করেছে। মানুষ আমাদের বলেছেন, আপনারা নির্বাচন বয়কট করেছেন আমরা কাকে ভোট দেবো। আমরা বলেছি, আপনাদের নিরাপত্তা ও নিরপেক্ষ ভোটের জন্য আমরা বয়কট করেছি।
প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনা করে দলটির একাধিক নেতা বলেন, ২০১৮ সালের নির্বাচনে আস্থা রাখার কথা বলে ভোটচুরি করেছেন। দলীয় সরকারের অধীনে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না। বর্তমানে যে নির্বাচন পদ্ধতি রয়েছে সেটিরও পরিবর্তন চাই।