পলাশী দিবসের আলোচনা সভায় মুসলিম লীগ নেতৃবৃন্দ বলেন, মুসলিম সামরিক শক্তির কাছে পর পর ৮টি ক্রসেড যুদ্ধে পরাজিত হবার পর খৃষ্টান বিশ্ব মুসলিম ভারত দখল করার পরিকল্পনা গ্রহন করে। লক্ষ্য পূরন করতে ইউরোপের বিভিন্ন দেশ ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী নামে বাণিজ্য প্রতিষ্ঠান গঠন করে বণিকরূপে ভারতে বাণিজ্য শুরু করে। মুসলিম শাসন বিরোধী বর্ণবাদী হিন্দুরা বৃটিশ ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর ইংরেজ বণিকদের সঙ্গে স্বার্থ সংশ্লিষ্ট সখ্যতা গড়ে তুলেন। দিল্লীর শাসনমুক্ত স্বাধীন বাংলা থেকে ৫৫৪ বছরের মুসলিম শাসনের অবসান ঘটাতে অক্ষম হিন্দু সমাজপতিরা ইংরেজদের কাঁধে সওয়ার হন।
নেতৃবৃন্দ বলেন, জগৎশেঠ মহতাপচাঁদ, তদীয় পিতৃব্য ভ্রাতা মহারাজা স্বরূপচাঁদ, রায় দুর্লভ, উর্মিচাঁদ, দেওয়ান রাজ বল্লভ, রাজা রাজ নারায়ন, রাজা কৃষ্ণ চন্দ্র রায় জমিদার আর্মত্য ও সমাজপতিরা ইংরেজদের সঙ্গে ষড়যন্ত্র ও আঁতাত করে নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে পরাজিত করতে ১৭৫৭ খৃষ্টাব্দের ২৩ জুন পলাশী প্রান্তরে আয়োজন করেন যুদ্ধের নামে যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা। জগৎশেঠ প্রচুর অর্থ ঘুষ দিয়ে নবাবের কতিপয় সেনাপতি ও মসনবদারকে যুদ্ধ থেকে বিরত রাখে। ফলে নবাবের ৫০ হাজার সৈন্য থাকার পরও মাত্র ৫ হাজার সৈন্য নিয়ে রবাট ক্লাইভ এক রকম বিনা যুদ্ধে জয়ী হয়ে বাংলার স্বাধীনতা লুন্ঠন করেন।
আলোচনা সভায় নেতৃবৃন্দ বলেন, স্বাধীন শাসক ২৪ বছর বয়সী নবাব সিরাজউদ্দৌলাহকে পরাজিত করিয়ে হিন্দু সমাজপতিরা ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর ইংরেজ বণিকদের হাতে বাংলার স্বাধীনতা ও শাসনভার তুলে দেন। একই ভাবে হিন্দু সমাজপতিদের সহায়তা নিয়ে ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী ১০০ বছর পর ১৮৫৭ খৃষ্টাব্দে মুঘল বাদশাহ দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ জাফরকে পরাজিত ও রেঙ্গুনে নির্বাসিত করে ৬৫১ বছর পর দিল্লীর মসনদ থেকে মুসলিম শাসন উৎখাত করে স্বাধীন মুসলিম ভারতকে পরিণত করেন পরাধীন বৃটিশ ভারতে।
শুক্রবার সকালে পল্টনস্থ বাংলাদেশ মুসলিমলীগ কেন্দ্রিয় কার্য্যালয়ে বাংলাদেশ মুসলিম লীগের আয়োজনে বিভিন্ন রাজনৈতিক কেন্দ্রিয় নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে পলাশী দিবস উপলক্ষ্যে এক আলোচনা সভায় নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন। আলোচনা সভায় বাংলাদেশ মুসলিম লীগের নির্বাহী সভাপতি আব্দুল আজিজ হাওলাদের সভাপতিত্বে মুসলিমলীগের সহ সাংগঠনিক সম্পাদক এম. এম. মাহবুবুর রহমান ভূইয়ার পরিচালনায় প্রধান বক্তা ছিলেন দলীয় মহাসচিব কাজী আবুল খায়ের, স্থায়ী কমিটির সিনিয়র সদস্য আতিকুল ইসলাম, আনোয়ার হোসেন, অ্যাডভোকেট আফতাব হোসেন মোল্লা, মুসলিমলীগের সহ সভাপতি মো: নজরুল ইসলাম, অতিরিক্ত মহসচিব আকবর হোসেন পাঠান, কেন্দ্রীয় নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান, প্রচার সম্পাদক শেখ এ সবুর, শ্রম সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার ওসমান গণি ও মহিলা সম্পাদিকা ডক্টর হাজেরা বেগম।