• সোমবার, ২০ জানুয়ারী ২০২৫, ১২:৫৪ পূর্বাহ্ন

পদ্মা সেতুকে ঘিরে বদলে যাচ্ছে দেশের অর্থনীতি: ওবায়দুল কাদের

নিউজ ডেস্ক
আপডেটঃ : রবিবার, ২৫ জুন, ২০২৩

‘পদ্মা সেতুতে দৈনিক গড়ে প্রায় ২ কোটি ১৮ লাখ টাকা আয় হয় জানিয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘উদ্বোধনের পর থেকে আমাদের আর থেমে থাকতে হয়নি। নিরবচ্ছিন্ন সেবা দিয়ে আসছে সেতুটি।’

পদ্মা সেতুকে ঘিরে দক্ষিণ-পশ্চিমের জনপদ, দেশের অর্থনীতি বদলে যাচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন সড়ক পরিবহনমন্ত্রী।

রবিবার সেতু ভবনের সম্মেলন কক্ষে পদ্মা সেতু উদ্বোধনের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

এ সময় নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণে সাহসী সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এ নির্মাণযজ্ঞে বিভিন্ন ধাপে যারা সহযোগিতা করেছেন, নানা ত্যাগ স্বীকার করেছেন এবং করে যাচ্ছেন, তাদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।’

মন্ত্রী ধন্যবাদ জানান গণমাধ্যমকর্মীদের। বলেন, ‘ধন্যবাদ জানাচ্ছি সাংবাদিক বন্ধুদের, যারা নির্মাণ কাজের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত কুয়াশাঘেরা সকালে, তপ্ত মধ্যাহ্নে, বৃষ্টিস্নাত বিকালে, গোধূলি-সন্ধ্যার আবছা আলোয় আমার সঙ্গে ছুটে গিয়েছেন, জনগণকে হালনাগাদ তথ্য এবং অন্যান্য বিষয়াদি অবহিত করেছেন।’

সাংবাদিকদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা সবই জানেন এবং দেখছেন, একটি সেতু কীভাবে বদলে দিতে পারে অর্থনৈতিক চালচিত্র।’ তিনি বলেন, ‘দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ১৯টি জেলার সঙ্গে এখন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে সড়ক-সংযোগ। এ সেতুর মাধ্যমে মোংলা, পায়রা পোর্ট, বেনাপোল স্থলবন্দরের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপিত হয়েছে। যাত্রী ও পণ্য পরিবহন এখন সময় ও ব্যয় সাশ্রয়ী। নদীর ওপারের একসময়ের অবহেলিত জনপদ আজ দ্যুতিময়। গড়ে উঠছে ছোট-বড় শিল্প কারখানা। খুলে গেছে স্বপ্নের দ্বার এবং সম্প্রসারিত হয়েছে সম্ভাবনার দিগন্ত।’

‘সর্বশেষ সংশোধন অনুযায়ী এ সেতু নির্মাণে ৩২ হাজার ৬০৫ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমাজানের পর পদ্মাকে বিবেচনা করা হয় মোস্ট আনপ্রেডিক্টেবল রিভার হিসেবে।

নদীর আচরণ দেখে শেষদিকে এসে ডিজাইনে সামান্য পরিবর্তন আনতে হয়েছিল উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘নির্মাণ কাজের প্রতিটি ধাপেই ছিল নানান চ্যালেঞ্জ।’

‘ডাবল ডেকার পদ্মা সেতু শুধু নিছক একটি পারাপারের সেতুই নয়’ মন্তব্য করে সড়ক পরিবহনমন্ত্রী বলেন, ‘এর সঙ্গে যেমন রয়েছে রেললাইন, তেমনই এপার থেকে ওপারে চলে গেছে ব্যাস এবং অপটিক্যাল ফাইবার লাইন। পাশাপাশি নির্মাণ করা হয়েছে ঢাকাসহ সারাদেশে বিদ্যুৎ সঞ্চালনের জন্য আলাদা ৪০০ কেভিএ বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘উন্নয়ন একটি বহুমাত্রিক ধারণা। শেখ হাসিনা সরকারের উন্নয়ন ও অর্জন আজ ৫৬ হাজার বর্গমাইলজুড়ে। উন্নয়ন জনগণের জন্য। উন্নয়ন সমৃদ্ধির জন্য। উন্নয়ন আমাদের স্বপ্নের সোনার বাংলা নির্মাণের জন্য। তারই ধারাবাহিক প্রয়াসে নির্মিত হয়েছে পদ্মা সেতু।’

তিনি বলেন, ‘পদ্মা সেতুকে ঘিরে বদলে যাচ্ছে দক্ষিণ-পশ্চিমের জনপদ, দেশের অর্থনীতি। এরই মাঝে মধুমতি নদীর ওপর নির্মাণ করা হয়েছে কালনা সেতু। যাত্রী পরিবহনের পাশাপাশি আমদানি-রপ্তানি পণ্য পরিবহন, কৃষি পণ্য ও কাঁচামাল বিপণন, শিল্পায়ন এবং পর্যটন শিল্পের বিকাশ ঘটছে। বেড়েছে পুঁজির প্রবাহ, কর্মসংস্থান। শেখ হাসিনা সরকারের নেতৃত্বে যোগাযোগ ব্যবস্থায় আজ বৈপ্লবিক পরিবর্তন দৃশ্যমান।’

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, ‘যারা পদ্মা সেতু নিয়ে নানান অপপ্রচার করেছে, গুজব ছড়িয়েছে, ষড়যন্ত্র করেছে তাদের সব অপপ্রচার, গুজব আর ষড়যন্ত্রের বিপরীতে প্রমত্তা পদ্মার বুকচিরে দাঁড়িয়ে আছে আমাদের সক্ষমতার প্রতীক পদ্মা সেতু। এ সেতুই তাদের ষড়যন্ত্রের জুতসই জবাব।’

তিনি আরও বলেন, ‘নিন্দুকের মুখেও এখন আমরা প্রশংসা শুনতে পাই। শেখ হাসিনার অসীম সাহসই আমাদের অমিত সম্ভাবনার দ্বার উন্মুক্ত করেছে। পদ্মা সেতু আমাদের এ ব্রিজ অব প্রাইড। এটি জাতীয় সম্পদ। এ সম্পদের ব্যবহার, সংরক্ষণ এবং রক্ষণাবেক্ষণে আমাদের হতে হবে যত্নবান।’


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ