• রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:০০ অপরাহ্ন

একজন মনোয়ারা বেগম ও অকৃতজ্ঞ সন্তানদের কথা

আপডেটঃ : শনিবার, ৭ অক্টোবর, ২০১৭

বৃদ্ধার তিন ছেলে পুলিশের কর্মকর্তা। একজন অবসরে গেছে, অন্য দু’জন এখনও কর্মরত। বাকি দুই ছেলের একজন ব্যবসা করে, অন্যজন ইজিবাইক চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে। একমাত্র কন্যা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা। তারপরও বৃদ্ধার জীবন চলছিল অর্ধাহারে-অনাহারে। কোনোদিন একবেলা খাবার জুটতো, কোনোদিন জুটতো না। চিকিৎসারও কোনো ব্যবস্থা ছিল না। ছেলেমেয়েরা কোনোদিন খবর নেয়নি তাদের গর্ভধারিনী মা কোথায় আছেন, কেমন আছেন।
দুর্ভাগা এ মায়ের নাম মনোয়ারা বেগম। বয়স সত্তর বছরের ঊর্র্ধ্বে। বাড়ি বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জ উপজেলার ক্ষুদ্রকাঠি গ্রামে। তিন বছর আগে স্বামী আইয়ুব আলী মারা গেছেন। সাধারণ কৃষক আইয়ুব আলী নিজে অনেক কষ্ট করে তাদের ছয় সন্তানকেই লেখাপড়া করিয়েছিলেন। নিয়তির নিষ্ঠুর পরিহাস, ছেলেমেয়েরা প্রতিষ্ঠিত হলেও বাবা মারা যাবার পর কেউ তাদের মায়ের খোঁজ নেয়নি। একমাত্র ইজিবাইক চালিয়ে সংসার চালায় যে ছেলে, সে মাঝে মধ্যে মায়ের খোঁজ-খবর নিতো।
গত ২০ সেপ্টেম্বর দৈনিক ইনকিলাব-এ সে বৃদ্ধার করুণ কাহিনী ছাপা হয়েছে। ভিক্ষা করে জীবন ধারণ করতেন বৃদ্ধা মনোয়ারা বেগম। ভিক্ষা করতে গিয়ে পা ফসকে পড়ে হিপ জয়েন্টের হাড় ভেঙ্গে গিয়েছিল তার। সে থেকে তিনি চলৎশক্তিহীন। কিন্তু চিকিৎসা করাতে পারেননি। সংবাদ মাধ্যমে বৃদ্ধার এ মানবেতর জীবন-যাপনের খবর প্রকাশিত হওয়ার পর এগিয়ে এসেছেন বরিশাল-৩ আসনের সংসদ সদস্য শেখ টিপু সুলতান। তার উদ্যোগে মনোয়ারা বেগমকে ভর্তি করা হয় বরিশাল শেরে বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। তিনি এ বৃদ্ধা মহিলার ভরণ-পোষণেরও দায়িত্ব নেন। পাশাপাশি সরকারি চাকরিতে থাকা বৃদ্ধার ছেলে-মেয়েদের খোঁজ-খবর করে সংশ্লিষ্ট বিভাগে বিষয়টি অবহিত করার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন।
সংসদ সদস্যের এ উদ্যোগকে ধন্যবাদ জানাতেই হয়। তিনি শুধু একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে তার এলাকার একজন অসহায় মহিলার সাহায্যার্থে পদক্ষেপ নেননি, চলৎশক্তিহীনা নিরন্ন এক মায়ের পাশে সন্তানের দায়িত্ব পালনে এগিয়ে এসেছেন। একজন মানুষ হিসেবে শেখ টিপু সুলতান অনেক বড়ো একটি কাজ করলেন, যা অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। যে কাজটি করার কথা বৃদ্ধার ছেলে-মেয়েদের, সে কাজ করলেন একজন এমপি। আমরা তো সুযোগ পেলেই রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সমালোচনায় মুখর হই, তাদের খারাপ মানুষ হিসেবে চিহ্নিত করতে উৎসাহী হয়ে উঠি। কিন্তু রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যেও যে সংবেদনশীল মনের অধিকারী ভালো মানুষ আছেন, এমপি শেখ টিপু সুলতান কি তার উদাহরণ নয়?
এমনি আরেকটি ঘটনার কথা আমরা জেনেছিলাম মোহাম্মদ শাহেদ নামে একজন ব্যবসায়ীর একটি ফেসবুক স্ট্যাটাস থেকে, ঢাকার উত্তরায় যার একটি হাসপাতাল আছে রিজেন্ট হাসপাতাল নামে। তিনি লিখেছিলেন, এক হতভাগ্য পিতার কথা। ভদ্রলোক ছিলেন উচ্চ পদস্থ সরকারি কর্মকর্তা। পুত্র-কন্যাদের লেখাপড়া শিখিয়ে ‘মানুষ’ করেছিলেন। ঢাকার উত্তরায় ছিল তার পাঁচতলা বাড়ি। কিন্তু বৃদ্ধ বয়সে সে বাড়িতে বৃদ্ধের ঠাঁই হয়নি। অসুস্থ বৃদ্ধ লোকটি কখনো কোনো মসজিদের বারান্দায়, কখনো ফুটপাতে রাত কাটাতেন। একদিন মসজিদের সামনে তাকে দেখতে পেলেন মোহাম্মদ শাহেদ। গুরুতর অসুস্থ সে বৃদ্ধকে এনে ভর্তি করালেন নিজের হাসপাতালে। বৃদ্ধের কাছ থেকে জেনে নিলেন তার পরিচয়, ছেলেমেয়েদের ঠিকানা। শাহেদ সাহেব তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলেন। কিন্তু বৃদ্ধের প্রতিষ্ঠিত পুত্ররা কেউ সাড়া দিল না। যোগাযোগও করল না। অগত্যা শাহেদ সাহেব নিজেই ভার নিলেন বৃদ্ধের চিকিৎসার। বৃদ্ধের হার্টের অবস্থা ছিল খুবই নাজুক। তার ওপর বার্ধক্যজনিত আরো কিছু রোগ তাকে চেপে ধরেছিল। দিন পনের পরে বৃদ্ধ ইন্তেকাল করলেন। শাহেদ আবারও যোগাযোগ করলেন বৃদ্ধের পুত্রের সঙ্গে। জানালেন পিতার মৃত্যু সংবাদ। বললেন এসে পিতার লাশ দাফনের ব্যবস্থা করতে। উত্তরে ব্যবসায়ের কাজে অতি ব্যস্ত পুত্র জানালো, সে খুব ব্যস্ত। আসা সম্ভব নয়। তাহলে তার পিতার লাশের কী হবে জানতে চাইলে পুত্র বললো, লাশটা অঞ্জুমানে মুফিদুল ইসলামকে দিয়ে দিন। না, শাহেদ সে লাশ আঞ্জুমানে মুফিদুল ইসলামকে দেননি। পরম মমতায় তিনি সযতেœ ভাগ্যাহত বৃদ্ধের লাশ দাফনের ব্যবস্থা করেছিলেন।
পিতা-মাতাকে বৃদ্ধ বয়সে ছেঁড়া ন্যাড়ার মতো ছুঁড়ে ফেলে দেয়ার ঘটনা আমাদের সমাজে বিরল নয়। বরং বলা যায়, এ ধরনের ঘটনা যেন প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে। যে পিতা-মাতা জন্ম দিয়ে পৃথিবীর আলো-বাতাস দেখালেন, নিজেরা কষ্ট করে ছেলে-মেয়েদের মানুষ করলেন, বৃদ্ধ বয়সে তারাই বাবা-মা’র কোনো খোঁজ নেবে না, তাদের ভরণ-পোষণের দায়িত্ব নেবে না, এ কথা বিবেকমান মানুষের পক্ষে কি মেনে নেয়া সম্ভব? কয়েক মাস আগে আরেক মায়ের সন্ধান পাওয়া গিয়েছিল নারায়ণগঞ্জে, যাকে তার পুত্র ফেলে দিয়েছিল রাস্তায়। সংবাদ মাধ্যমে খবর বেরুনোর পরে জেলা প্রশাসকের উদ্যোগে সেই অসুস্থ অবহেলিত মায়ের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছিল।
কিন্তু কেন এমন হচ্ছে? কেন কিছু সংখ্যক মানুষ তাদের জন্মদাতা বাবা ও জন্মদাত্রী মায়ের প্রতি এমন নিষ্ঠুর আচরণ করছে? তারা কি নৈতিক শিক্ষা পায়নি? তারা কি শোনেনি পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের কর্তব্য সম্পর্কে ধর্ম কী বলেছে? প্রতিটি ধর্মেই পিতা-মাতার স্থান দিয়েছে সর্বোচ্চে। আমাদের ধর্মে তো পরিষ্কারই বলা আছে, মা’য়ের পায়ের নিচে সন্তানের বেহেশত। মা-বাবা’র হক আদায় করবে না যে সন্তান, বেহেশতে তার প্রবেশাধিকার থাকবে না- একথাও কোরান-হাদিসে বর্ণিত আছে। এসব কথা কে না জানে? যারা বাবা- মা’কে অবহেলা অবজ্ঞা করছে, তারাও এসব কথা জানে। তারপরও আমাদের সমাজে এ ধরনের দুঃখজনক ঘটনা প্রায়শই ঘটতে দেখা যায়।
কতিপয় মানুষের মধ্যে এই যে মূল্যবোধের অবক্ষয়, এ জন্য দায়ি কে বা কারা? কেউ হয়তো বলতে পারেন, অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের সঠিক শিক্ষা দিতে পারেননি বলেই এ ধরনের ঘটনা ঘটছে। এ অভিযোগ সর্বাংশে সঠিক বা বেঠিক তা বলা যাবে না। আসলে মানবিক ও ধর্মীয় শিক্ষার অভাবজনিত কারণেই কতিপয় মানুষ প্রথমে আত্মকেন্দ্রিক, পরে স্বার্থপর হয়ে উঠছে। মানুষ হিসেবে প্রতিটি মানুষেরই যে অপরের প্রতি দায়িত্ব-কর্তব্য আছে, তা অনেকেই ভুলে যাচ্ছে। মানুষ যেন এখন যন্ত্রে পরিণত হয়েছে। আশপাশে তাকানোর সময় তাদের নেই। শুধু নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত তারা।
একটি বিষয় লক্ষণীয়, যেসব সন্তান পিতা-মাতাকে অবহেলা করছে, খোঁজ-খবর রাখছে না, তারা কিন্তু নিজেদের সন্তানকে ¯েœহ-ভালবাসা দিয়ে লালন-পালন করছে। অবাক করা বিষয় হলো, নিজ সন্তানের জন্য উদয়াস্ত পরিশ্রম করার সময় তাদের এ কথাটি মনে হচ্ছে না যে, তাদের পিতা-মাতাও তাদেরকে এভাবেই লালন-পালন করেছে। এ প্রসঙ্গে আমার মায়ের কাছে শোনা একটি গল্প এখানে উল্লেখ করতে চাই। পুত্র শহরে থাকে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে। বাবা-মা গ্রামে থাকেন। পুত্র দীর্ঘদিন বাড়ি আসে না। পিতা বারবার চিঠি লেখেন পুত্রকে বাড়ি আসতে। বেশ কয়েকটি চিঠি পাবার পর ব্যস্ত পুত্র বাড়ি এলো বাধ্য হয়ে। সে বাবা-মাকে বললো, তোমরা তো আমাকে আসতে বলো, কিন্তু খোকাকে রেখে তো আমি আসতে পারি না। খোকা ওই পুত্রের শিশু ছেলে। তখন একটি দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে পিতা বললেন, ‘বাবা, আজ তোমার খোকা হয়েছে, তাকে ছেড়ে তোমার আসতে কষ্ট হয়। তুমিও তো আমাদের খোকা। তোমাকে দেখতে কি আমাদের মন চায় না?’ পুত্র কথা দিলো প্রতিমাসে একবার বাবা-মা’কে দেখে যাবে। গল্পটির সারমর্ম বোধকরি ব্যাখ্যা করে বলার দরকার পড়ে না। আজ যারা নিজের স্ত্রী-পুত্র-কন্যা নিয়ে সংসার সাজিয়ে মহা আনন্দে দিনগুজরান করছে, তারা কেন ভুলে যায়, একদিন তারাও বাবা-মা’র আদরের সন্তান ছিল এবং ভবিষ্যতে তারাও একদিন বৃদ্ধ মাতা-পিতায় পরিণত হবে? তখন যদি তাদের সন্তানরাও একই ধরনের আচরণ করে তখন কেমন লাগবে?
এর বিপরীত চিত্রও কিন্তু আছে। আর সে সংখ্যাটাই বেশি। বাবা-মা’র প্রতি অপরিসীম শ্রদ্ধা, কর্তব্যপরায়ণতার অসংখ্য উদাহরণ আমাদের সমাজে আছে। বাব-মা, ছোট ভাই-বোনদের জন্য নিজের স্বার্থ ত্যাগের উদাহরণের অভাব নেই আমাদের সমাজে। এবার ঈদুল আযহা উপলক্ষে একটি টিভি চ্যানেলে প্রচারিত ‘বড় ছেলে’ নাটকটি প্রচুর দর্শকপ্রিয়তা পেয়েছে। ইউটিউবে এখনো সে নাটকের দর্শক সংখ্যা বেড়েই চলেছে। দায়িত্ববান এক যুবক যে সংসারের বড় ছেলে, তাকে কেন্দ্র করেই সে নাটক। নাটকে দেখানো হয়েছে, বাবা-মা, ভাই-বোনের কথা চিন্তা করে সে যুবক তার প্রেম ও প্রেমিকাকে কীভাবে বিসর্জন দিলো! নাটক তো নাটকই। তবে, বাস্তবের ঘটনাকে উপজীব্য করেই তো নির্মিত হয় নাটক। বড় ছেলে নাটকের ওই যুবকের মতো হাজারো ছেলে তাদের বাবা-মা সংসারের জন্য নিজেদের চাওয়া-পাওয়া, সুখ-শান্তি, আশা-আকাঙ্খাকে অবলীলায় পায়ে দলছে। তাদের কথা কেউ জানে না। কারণ, তারা সংবাদের শিরোনাম হয় না।
শুধু নাটকেই নয়, বাস্তবেও এ দৃষ্টান্তের অভাব নেই। মিয়ানমার সরকারের জাতিগত নিধন অভিযানের হাত থেকে কয়েক লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে এসে আশ্রয় নিয়েছে বাংলাদেশে। এর মধ্যে বৃদ্ধা মাকে কাঁধে করে মাইলের পর মাইল হেঁটে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছে এক রোহিঙ্গা যুবক। নিজের জীবন বাঁচাতে সে ইচ্ছে করলে মাকে ফেলেই চলে আসতে পারতো। কিন্তু গর্ভধারিনী মাকে সে ফেলে আসেনি। বরং জীবনের ঝুঁকি অনেকাংশে বাড়িয়ে সে তার মাকে কাঁধে বহন করে পথ হেঁটেছে দিনের পর দিন, রাতের পর রাত। মা-বাবার প্রতি সন্তানের কি দায়িত্ব এবং কীভাবে সেটা পালন করতে হয়, রোহিঙ্গা শরণার্থী ওই যুবক কি তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ নয়?
লক্ষ করলে দেখা যাবে, দেশে বৃদ্ধাশ্রমের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। বিত্তশালী কিংবা সমাজসেবকরা অসহায় অশীতিপর বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের জন্য গড়ে তুলছে এসব আশ্রম। পুত্র-কন্যা, আত্মীয়-পরিজনহীন বৃদ্ধ-বৃদ্ধা ছাড়াও সেখানে আশ্রয় মিলছে ছেলে-মেয়ে কর্তৃক রাস্তায় ঠেলে ফেলে দেয়া অসহায় পিতা-মাতার। একশ্রেণির মানুষের আত্মকেন্দ্রিক চিন্তা-ভাবনা এবং একাই সুখ ভোগ করার অশুভ মানসিকতাই এর মূল কারণ।
বরিশালের মনোয়ারা বেগমের পাশে তার পুলিশ কর্মকর্তা ছেলেরা না দাঁড়ালেও তাদেরই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বাড়িয়ে দিয়েছেন সাহায্যের হাত। পুলিশের বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজি হাসপাতালে দেখতে গিয়েছিলেন তাকে। আশ্বাস দিয়েছেন চিকিৎসার প্রয়োজনীয় খরচ ও অন্যান্য সহযোগিতার। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দাবি উঠেছে, ওই অকৃতজ্ঞ পুলিশ কর্মকর্তা তিন ছেলের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার। এ দাবি অযৌক্তিক নয়। বাংলাদেশে আইন রয়েছে বাব-মা’র প্রতি সন্তানের দায়িত্ব পালন সংক্রান্ত। সে আইনে বাবা-মা’র ভরণ-পোষণ না দিলে বা তাদের প্রতি অর্পিত দায়িত্ব পালন না করলে সন্তানদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার বিধান রয়েছে। বরিশালের মনোয়ারা বেগমের ছেলে-মেয়ের বিরুদ্ধে সে আইনি পদক্ষেপ নেয়া জরুরি। যাতে আর কোনো মনোয়ারা বেগমকে এমন বিভীষিকাময় পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে না হয়।
লেখক: সাংবাদিক


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ