সড়ক বিভাজক ও ফুটপাতে ৭৭টি পুলিশ বক্স নূতন করিয়া নির্মাণের উদ্যোগ নিয়াছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। জানা যায়, বর্তমানে ৫৫টি স্থানে টিন ও স্টিলের ট্রাফিক পুলিশ বক্স রহিয়াছে। এই স্থানগুলিতে এবং আরো ২২টি স্থানে নূতন পরিকল্পনা ও ডিজাইনে পুলিশ বক্স নির্মাণ করা হইবে। এইজন্য ব্যয় হইবে প্রায় পাঁচ কোটি টাকা। এই পুলিশ বক্সগুলি হইবে স্বচ্ছ কাচ দিয়া ঘেরা। ইতোমধ্যে গুলিস্তানের গোলাপ শাহ মাজার এলাকায় সড়ক বিভাজকের ওপর নির্মিত এই রকম একটি পুলিশ বক্সের উদ্বোধন করিয়াছেন ডিএসসিসির মেয়র। বর্তমান পুলিশ বক্সের কাঠামোটি অনেকের নিকটই দৃষ্টিনন্দন বলিয়া মনে হইয়াছে। ইহাতে শহরের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পাইবে বলিয়া আশা করা যায়। উল্লেখ্য, ইহার আগে বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের অর্থায়নে সম্পূর্ণ অপরিকল্পিতভাবে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে পুলিশ বক্স নির্মাণ করা হয়। এই বক্সগুলি নিয়া ওঠে নানা সমালোচনা। এইসকল বক্সে ব্যানার-পোস্টারের কারণে নগরীর পরিবেশ নষ্ট হয়। বিশেষ করিয়া পুলিশ বক্সগুলি অস্বচ্ছ ছিল বলিয়া সেখানে নানা অপকর্ম ঘটিবারও সুযোগ ছিল। তবে বর্তমান পরিকল্পনায় নির্মিত ও নির্মিতব্য পুলিশ বক্সের ব্যাপারে এই ধরনের অভিযোগ তুলিবার অবকাশ নাই। কেননা একপাশে কয়েক ফুট উঁচু একটি দেওয়াল ব্যতীত আর কোনো দেওয়াল নাই। তাহাছাড়া চারিপাশ স্বচ্ছ কাচ দিয়া ঘেরা।
বস্তুত সড়কে ট্রাফিক পুলিশ বক্স নির্মাণ করিবার প্রয়োজনীয়তাকে অস্বীকার করা যায় না। ট্রাফিক পুলিশদের কাজের যে প্রকৃতি তাহাতে দেখা যায়, তাহারা অধিক কায়িক পরিশ্রম ও কষ্ট করেন। অনেক সময় প্রচণ্ড রোদ ও প্রবল বৃষ্টির মধ্যেও তাহাদের কাজ করিতে হয়। ইহাতে তাহাদের অসুবিধা হইবারই কথা। বিশ্বের অনেক দেশেও ট্রাফিক পুলিশদের সাময়িক বিশ্রাম গ্রহণ ও প্রয়োজনে সেখান হইতে যানবাহন নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা রহিয়াছে। আছে স্যানিটেশনের ব্যবস্থাও। সেখানে তাহারা তাহাদের প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদিও রাখিতে পারেন। বাংলাদেশ এখন অর্থনৈতিকভাবে উন্নতি করিতেছে। সুতরাং সুযোগ-সুবিধার দিক দিয়া ট্রাফিক পুলিশরাও আর পিছাইয়া থাকিতে পারেন না। তবে বর্তমান অবকাঠামোতে যানবাহন মোড় নেওয়ার সময় চালকের দৃষ্টি পুলিশ বক্সের কারণে বাধাগ্রস্ত হইয়া দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়িতে পারে বলিয়া কেহ কেহ সমালোচনাও করিতেছেন। তবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ মনে করেন যে, ইহাতে কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়িবে না। আমরা আশা করি, এই পুলিশ বক্স যাত্রী ও ট্রাফিক পুলিশ-উভয়ের জন্যই কল্যাণ বহিয়া আনিবে। দক্ষিণের ন্যায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনেও অনুরূপ প্রকল্প গ্রহণ করা দরকার।