যমুনার বুকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেল সেতু নির্মাণের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। ইতিমধ্যে ৮০ শতাংশ কাজ সমাপ্ত হয়েছে। ৪.৮ কিলোমিটার দীর্ঘ সেতুর প্রায় তিন দশমিক ৮ কিলোমিটার এখন দৃশ্যমান হয়ে উঠেছে।
সূত্র জানায়, সব কিছু ঠিক থাকলে চলতি বছরের ডিসেম্বরে প্রকল্পের অধীন রেললাইন বসানোর কাজ শেষ হবে। ২০২৫ সালের শুরুর দিকে বাণিজ্যিক ট্রেন চলাচল শুরু হতে পারে। বর্তমানে একই সঙ্গে সেতু নির্মাণে একদিকে চলছে খুঁটি স্থাপন, অন্যদিকে খুঁটিতে স্প্যান বসানোর কাজও চলমান। ৪৯টি স্প্যানের মধ্যে ৩৭টি স্প্যান বসানো হয়েছে।
আগামী বছর বাণিজ্যিক ট্রেন চললেও পুরোটা সময় ‘ডিফেক্ট লায়াবিলিটি পিরিয়ড’ হিসেবে রাখা হয়েছে। এ সময় ট্রেন চলাচলে ত্রুটি-বিচ্যুতি পরীক্ষা করা হবে।
নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতুতে চলাচল শুরু হলে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১০০ কিলোমিটার গতিতেও ট্রেন চালানো সম্ভব হবে। যমুনা নদীতে বিভক্ত রেলের পূর্বাঞ্চল ও পশ্চিমাঞ্চলের মধ্যে আধুনিক ট্রেন যাত্রার সূচনা হবে। একই সঙ্গে এই সেতুটি সার্ক, বিমসটেক, সাসেক ও অন্যান্য আঞ্চলিক ও উপ-আঞ্চলিক রেলওয়ে রুট এবং ট্রান্স-এশিয়ান রেলওয়ে নেটওয়ার্কের একটি অংশে পরিণত হতে যাচ্ছে। নানা জটিলতায় কাটিয়ে দেশের অভ্যন্তরীণ, আঞ্চলিক, উপ-আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পণ্য পরিবহনের সুযোগ তৈরি হতে যাচ্ছে।
প্রকল্প পরিচালক আল ফাত্তাহ মো. মাসউদুর রহমান বলেন, ‘আমাদের দায়িত্ব প্রকল্পের কাজ শেষ করা। ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত সরকার নেবে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজটা শেষ করতে পারবো বলে আশা করছি। এখন কাজের অগ্রগতি খুবই ভালো। ১০৩ জন বিদেশি প্রকৌশলীসহ দেশি-বিদেশি মিলে ৭ শতাধিক প্রকৌশলী ও সাড়ে চার হাজার শ্রমিক রেলসেতু নির্মাণ যজ্ঞে যুক্ত রয়েছেন। ইতিমধ্যে ৮০ শতাংশ নির্মাণ কাজ সমাপ্ত হয়েছে।
এই রেল সেতুটি নির্মাণে প্রথমে ৯ হাজার ৭৩৪ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছিল। প্রথম সংশোধনীর পর ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি ৯৫ লাখ ৬৩ হাজার টাকা। এর মধ্যে দেশীয় অর্থায়ন ২৭.৬০ শতাংশ (চার হাজার ৬৩১ কোটি টাকা)। জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) ঋণ দিয়েছে ১২ হাজার ১৪৯ কোটি টাকা, যা প্রকল্পের ৭২.৪০ শতাংশ। সর্বশেষ গত ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রকল্পের আর্থিক অগ্রগতি হয়েছে ৫৭.৯৮ শতাংশ।