• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:০২ অপরাহ্ন

বোন কে ডেকি নিয়ে খুন করলেন সৎ ভাই

নিউজ ডেস্ক
আপডেটঃ : বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪

বোনকে বেড়াতে নিয়ে গিয়ে ফল কাটার ছুরি দিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে তার সৎ ভাইয়ের বিরুদ্ধে। পুলিশ বলছে, ঘটনার সময় মেয়েটির সৎ ভাই ছাড়াও তার স্ত্রী ও এক বন্ধু ছিলেন। আর ঘটনাটি ছিল পূর্বপরিকল্পিত।

এ ঘটনায় তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ। তারা সবাই খুনের পরিকল্পনার সঙ্গে যুক্ত। উদ্ধার করা হয়েছে খুনের কাজে ব্যবহৃত ছুরিটি।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) সকালে আটকদের এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে।

এর আগে বুধবার (২৭ মার্চ) সকালে গোদাগাড়ীর গোগ্রাম এলাকায় নির্মাণাধীন ফাঁকা পড়ে থাকা একটি দোতলা বাড়ির ওপরের তলার বাথরুমে ওই তরুণীর মরদেহ পাওয়া যায়। অজ্ঞাত ওই তরুণীর নাম সন্ধ্যা রানী (২০)। তিনি গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার শীশা বাঁশপীর গ্রামের হরিলালের মেয়ে।

তাকে খুনের অভিযোগে গ্রেপ্তার তিনজন হলেন- সন্ধ্যার সৎ ভাই ফুলবাবু রবিদাস ওরফে বাবু (২২), ফুলবাবুর স্ত্রী মিনতী রানী (২৫) এবং বন্ধু আদিল আহমেদ পলক (১৯)। পলকের গ্রামের বাড়ি রাজশাহী জেলার গোদাগাড়ী উপজেলার লালপুকুরে।

ফুলবাবু তার স্ত্রী মিনতী ও সৎ বোন সন্ধ্যাকে নিয়ে রাজশাহীর কর্ণহার থানা এলাকায় ভাড়া থাকতেন। বুধবার সকালে গোদাগাড়ীর গোগ্রাম এলাকায় নির্মাণাধীন ফাঁকা পড়ে থাকা একটি দোতলা বাড়ির ওপরের তলার বাথরুমে সন্ধ্যার মরদেহ পাওয়া যায়। তার পেট ও বুকে ছুরিকাঘাতের চিহ্ন ছিল। দুপুরে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠায়।

রাজশাহীর গোদাগাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল মতিন বাংলানিউজকে জানান, নিহত সন্ধ্যা রানীর মরদেহের পাশে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি পাওয়া গিয়েছিল আজ (বুধবার)। এই মোবাইল ফোনের সূত্র ধরেই নিহত তরুণীর পরিচয় জানা যায়। এছাড়া এই খুনের সঙ্গে জড়িতদেরও দ্রুত সময়ের মধ্যেই শনাক্ত করা সম্ভব হয়। এরপরই অভিযান চালিয়ে তিনজনকে আটক করা হয়েছে। তারা ঘটনার সঙ্গে জড়িত মর্মে স্বীকারও করেছেন।

ওসি আর জানান, ফুলবাবু তার স্ত্রী আর বোনকে নিয়ে ঢাকায় থাকতেন। সেখানে সন্ধ্যার একটি ছেলের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সেখানে তারা একটি ঘটনাও ঘটিয়ে এসেছে। রাজশাহী চলে আসার পর ফুলবাবু তার বোনের বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু সন্ধ্যা বিয়ে করতে রাজি হচ্ছিলেন না। তাই তাকে হত্যা করার পরিকল্পনা করা হয়।

এ জন্য মঙ্গলবার বিকেলে ফুলবাবু, তার স্ত্রী মিনতী ও আদিল বেড়াতে যাওয়ার কথা বলে সন্ধ্যাকে সিএনজি অটোরিকশায় করে গোদাগাড়ীর গোগ্রাম এলাকায় নিয়ে যান। আসার আগে রাজশাহীর হড়গ্রাম বাজার থেকে একটি ছোট ফল কাটার ছুরি আর কাটার কিনেন। গোগ্রাম গিয়ে তারা সিএনজিটি ছেড়ে দেন। এরপর হোটেলে খাওয়া-দাওয়া করেন। পরে কৌশলে ওই নির্মাণাধীন ফাঁকা বাড়িতে নিয়ে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেন সন্ধ্যাকে।

আর যাওয়ার সময় ঘটনাস্থল থেকে এক কিলোমিটার দূরে ধানের জমির নালায় সেই ছুরিটি পুঁতে রেখে যান। অভিযুক্তদের নিয়ে গিয়ে বিকেলে সেই ছুরি উদ্ধার করা হয়।

ওসি জানান, নৃশংস এই খুনের ঘটনায় হত্যা মামলা হবে। কিন্তু মামলার বাদী করার মতো আপাতত কাউকেই পাওয়া যাচ্ছে না। তবে রাতের মধ্যেই মামলা হবে। বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) সকালে আটকদের এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে। আর ঢাকায় যে ঘটনাটি ঘটেছিল তা আসলে কী ঘটেছিল সেটির তদন্ত করা হচ্ছে। কিছু জানতে পারলে পরে তা জানানো হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ