• বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১১:২৩ অপরাহ্ন

ভালুকায় আমন ক্ষেতে খোলপঁচা ও পাতামোড়ানো রোগ

আপডেটঃ : সোমবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

ভালুকা(ময়মনসিংহ)প্রতিনিধি॥
ময়মনসিংহের ভালুকার বিভিন্ন ইউনিয়নের কৃষকের আমন ক্ষেতে খোলপঁচা ও পাতামোড়ানো রোগ দেখা দিয়েছে । স্থানীয় ডিলারদের পরামর্শে আক্রান্ত ক্ষেতে কীটনাশক দিচ্ছেন কৃষক। এ সময় উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সঞ্জয় কুমার পাল লম্বা ছুটি নিয়েছেন বলে অফিস সূত্রে জানাগেছে। অপরদিকে গুরুত্বপুর্ণ কয়েকটি ব্লকে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা না থাকায় কৃষকরা সম্পুর্ণ রুপে ডিলার নির্ভর হয়ে পরেছেন।
ডাকাতিয়া ইউনিয়নের চাঁনপুর গ্রামে আক্রান্ত আমনক্ষেতে কীটনাশক স্প্রে করার সময় আবুল কালাম নামে একজন কৃষক জানান তার ভাই আমিনুল ইসলামের ৯ কাঠা জমিতে পাতামোড়া ও খোলপঁচা রোগ দেখা দেয়ায় দোকানদারের পরামর্শে এমিষ্টার টপ ঔষধ স্প্রে করছেন। তিনি জানান এ পর্যন্ত তাদের এখানে কৃষি বিভাগের কোন লোকজন আসেননি, চাঁনপুর বাজারের ব্যবসায়ী মহিবুলের দোকান থেকে এমিষ্টার টপ কীটনাশক কিনে ক্ষেতে দিচ্ছেন। এর আগে ওই দোকান থেকে মোটাদানা ইউরিয়া সার ৯০ টাকা পাল্লা দামে কিনে ক্ষেতে দিয়েছেন।
আঙ্গারগাড়া গ্রামে ক্ষেতে ঔষধ দেওয়ার সময় কৃষক আব্দুল হালিম মিয়া জানান দেড় একর জমিতে ব্রি-ধান ৪৯ জাতের আমন আবাদ করেছেন। কয়েকদিন যাবৎ তার ক্ষেতে খোল পঁচা ও পাতা মোড়ানো রোগ দেখা দিয়েছে। তিনি মরা ধানের ছোপা ও মোড়ানো পাতার ভিতরে পোকার  অসংখ্য সাদা ডিম বের করে দেখান। ওই ডিম থেকে ছোট ছোট লম্বাকৃতির কিড়া বা পোকা হয়ে ধানের পাতা মরে যায় বলে তিনি জানান। তিনিও অভিযোগ করেন সার ডিলার রফিকের নিয়োজিত সার ব্যবসায়ী সূর্য্যত আলীর দোকান থেকে ৯০ টাকা পাল্লা ইউরিয়া সার কিনে ক্ষেতে প্রয়োগ করেছেন।
উপজেলার মেদুয়ারী, বনকূয়া, নারাঙ্গী, উথুরা,মরচি, চামিয়াদী, কাতলামারী, পানিভান্ডা, ভান্ডাব, ভয়টাপাড়া, ভায়াবহ, নয়নপুর, তামাট, কাচিনা, টাসকাপাড়া, পাড়াগাঁও, গৌরিপুর, তালাব, রাজৈ, স্বজনগাঁও, নারাঙ্গী, পুরুড়া, ধলিয়া পলাশতলী, মাহমুদপুর সহ বিভিন্ন গ্রামের কিছু কিছু আমন ক্ষেতে খোলপঁচা ও পাতামোড়া রোগ দেখা দিয়েছে। এ বিষয়ে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সাবেরা আক্তার বলেন, পাড়াগাঁও ব্লকের কিছু ক্ষেতে এ রোগ দেখা দিয়েছে,তবে তা পরিমাণে কম। হবিরবাড়ী ব্লকের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সাইদুল ইসলাম জানান, তার ব্লকে এখন তেমন সমস্যা নেই।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাকে অফিসে খোঁজ করার সময় সহকারী কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা এ জেড এম মুঞ্জুরুল হক জানান উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সঞ্জয় কুমার পাল ০৪/০৯/২০১৮ থেকে ২৭/০৯/২০১৮ ইং পর্যন্ত ছুটি নিয়েছেন। ভারপ্রাপ্ত কৃষি কর্মকর্তা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা নূর মোহাম্মদ জানান মাঠ পর্যায়ে আমন ধানের ফলনের বর্তমান অবস্থা কোন কোন এলাকায় খোলপঁচা ও পাতা মোড়ানো রোগ স্বল্পাকারে দেখা দিয়েছে, তবে এসব প্রতিরোধে কৃষকদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। সারের অতিরিক্ত মূল্য নেয়ার বিষয়টি অভিযোগ পেলে সংশ্লিষ্ট ডিলার কিংবা বিক্রেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবেন। উপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষন কর্মকর্তা এনামুল হক জানান উপজেলার কাতলামারী, রাজৈ, চাঁনপুর, ঢাকিরভিটা, কোল্লাব ও রান্দিয়া ব্লকে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা না থাকায় কিছুটা সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। এমতাবস্থায় কোন কোন কৃষক দিশেহারা হয়ে পরেছেন।
এ বছর উপজেলায় ১৯ হাজার ৫৮৫ হেক্টর জমিতে আমন আবাদের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে। এলাকা ভিত্তিক কৃষকদের দেয়া তথ্যে জানাযায় ভালুকা উপজেলা সদর হতে ২১ কিলোমিটার দুরে বাটাজোর ব্লকে শামছুন্নাহার নামে একজন মহিলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে, যোগাযোগ ব্যবস্থা এতই খারপ যে একজন পুরুষ মানুষের পক্ষে সেখানে প্রতিদিন যাতায়াত করে ফসলের মাঠ পরিদর্শন সম্ভব নয়। একই অবস্থা চান্দাব ব্লকে, ভালুকা সদর হতে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দুরের ব্লকে পাপিয়া সরকার নামে একজন উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা দায়িত্ব পালন করছেন। কর্মস্থল এলাকায় অবস্থানের কথা থাকলেও অনেকে জেলা শহর, পার্শ্ব বর্তী ও দুরবর্তী এলাকা থেকে কর্মস্থলে আসেন বলেও জানা গেছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ