নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলায় বৈশাখী মেলায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ছুরিকাঘাতে মাজহারুল ইসলাম শাওন (২০) নামে এক মাদরাসা ছাত্রকে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় একই এলাকার পিয়াস (২৩) সহ দুই গ্রুপের আরও অন্তত ৬ জন আহত হয়েছে।
বুধবার (১৭ এপ্রিল) রাত সোয়া ৮টার দিকে উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের সেবারহাট বাজারের সাইন্স ক্লাবের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত মাজহারুল ইসলাম শাওন উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের উত্তর রাজারামপুর গ্রামের জমাদার বাড়ির আবুধাবি প্রবাসী কচি মিয়ার ছেলে। সে স্থানীয় উত্তর রাজারামপুর বশিরিয়া আলিম মাদরাসার আলিম দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলো।
সেনবাগ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. হেলাল উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, খবর পেয়ে পুলিশ তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষ গ্রুপের লোকজন শাওনকে হত্যা করে।
স্থানীয়রা জানায়, স্থানীয় প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) উপজেলার সেবারহাট বাজারের শেরে বাংলা উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে একদিনের জন্য বৈশাখী মেলার আয়োজন করে বাজারের ইজারাদার মাহফুজ, জোবায়ের ও সাইদুল হক মেম্বার।
এজন্য গত কয়েক দিন ধরে এলাকায় মাইকিং করে প্রচার করা হয়। এর মধ্যে বুধবার বিকেলে মেলায় চলে আসে ১৫-২০টি দোকান। একই দিন রাত ৮টার দিকে মেলায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের জসিম কন্ট্রাক্টরের ছেলে হৃদয়ের গ্রুপের সঙ্গে শাওন গ্রুপের বিরোধ দেখা দেয়।
একপর্যায়ে রাত সোয়া ৮টার দিকে সেবারহাট বাজারের সাইন্স ক্লাবের সামনে হৃদয়ের নেতৃত্বে তার গ্রুপের সদস্যরা শাওনের বুকে, পেটে ছুরিকাঘাত করে এবং একই সময়ে পিয়াস নামে আরও এক তরুণকে গুরুতর আহত করা হয়। পরে স্থানীয়রা তাদের আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ফেনীর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক শাওনকে মৃত ঘোষণা করেন। পিয়াসকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে।
জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বেগমগঞ্জ সার্কেল) মো. নাজমুল হাসান রাজীব জানান, অনুমোদনহীন মেলা বসানো কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়। ওই বিরোধের জের ধরে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ঘটনার পরপরই অবৈধ মেলা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
তিনি আরও জানান, অবৈধভাবে মেলা বসানো ও হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত আসামিদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চালানো হচ্ছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত কিছু আসামির নাম আমরা পেয়েছি। তবে তদন্ত শেষে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে।